ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে সৎ বাবা মো. মোতাহারকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১৮ জুন) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি মোতাহারকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অর্থদণ্ড টাকা আদায়ে আসামির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে ভিকটিমকে দেওয়ার জন্য ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর এরশাদ আলম (জর্জ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিন রায় ঘোষণার সময় আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে উপস্থিত করা হয়। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আসামি মো. মোতাহার ভুক্তভোগী নারীর সৎ বাবা। ভুক্তভোগীর মা রোকসানার সঙ্গে আসামি মোতাহারের বিয়ের পর থেকে তিনি তার মা ও সৎ বাবার সঙ্গে একত্রে বসবাস করতেন। আলাদা ঘরের ব্যবস্থা না থাকায় সবাই একই ঘরে থাকতেন।
সৎ বাবা মোতাহার বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন, তবে ভুক্তভোগী তাতে রাজি হননি। পরে ২০২১ সালের ২০ জুন রাত আনুমানিক ১০টায় আসামি মোতাহার ভুক্তভোগীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন।
ধর্ষণের সময় তিনি ভিকটিমকে হুমকি দেন যে, ঘটনা কাউকে জানালে তাকে হত্যা করবেন। ফলে ভুক্তভোগী প্রথমে বিষয়টি কাউকে জানাননি। পরবর্তীতে ২২ সেপ্টেম্বর আসামি পুনরায় ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন আসামি মোতাহার।
এ ঘটনার পর একই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী। গ্রেফতার হওয়ার পর আসামি স্বেচ্ছায় আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
এছাড়াও ধর্ষণের ফলে সৃষ্ট ভুক্তভোগীর গর্ভজাত মেয়ের ডিএনএ রিপোর্টে প্রমাণিত হয় যে, শিশুটির জৈবিক বাবা আসামি মো. মোতাহার।
মামলাটি তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার এসআই আবুল হাসান।
এরপর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে মোট ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।