রাজধানীর রামপুরায় ২০২৩ সালের জুলাই-আগস্টে ২৮ জনের হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দুই সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ১০টার পর ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে তাদেরকে কড়া নিরাপত্তায় প্রিজনভ্যানে করে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।
এ মামলায় বিজিবির লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলাম ও সাবেক মেজর মো. রাফাত বিন আলমের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানি চলবে।
প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে এবং বিচারক হিসেবে উপস্থিত আছেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার।
এদিন, ট্রাইব্যুনালের আশপাশ এলাকা ছিল নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা, যেখানে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব, বিজিবি এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন ছিলেন।
এ মামলায় অভিযুক্ত অন্য দুইজন হলেন- ডিএমপির খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম এবং রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান, যারা বর্তমানে পলাতক।
গত ২৪ নভেম্বর তাদের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পলাতকদের আইনজীবী হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাসুদ সালাহউদ্দিন ট্রাইব্যুনালে আবেদন জানিয়েছেন যাতে তাদের ভার্চুয়ালি উপস্থিতির অনুমতি দেওয়া হয়।
এর আগে, ২২ অক্টোবর, সেনা হেফাজতে থাকা রেদোয়ান ও রাফাতকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছিল। শুনানির পর, ট্রাইব্যুনাল তাদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং পলাতকদের হাজিরা নিশ্চিত করতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন।
২০২৩ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থানে হত্যাযজ্ঞ চলেছিল। বিশেষ করে রামপুরায় ২৮ জন নিহত হন এবং আরও অনেকেই আহত হন।
আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ছোঁড়ার বিষয়ে বিজিবি কর্মকর্তা রেদোয়ানুল ইসলাম সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই হত্যাযজ্ঞে অন্যান্য কর্মকর্তারাও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলে জানা যায়।
এ ঘটনায় তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী চারজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে এবং প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালে এই বিষয়ে শুনানি শুরু হবে।