মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুর ২টায় তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ছাড়েন তিনি।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সরকারপ্রধানের এটি ফিরতি সফর। আনোয়ার ইব্রাহিম গত অক্টোবরে ড. ইউনূসের আমন্ত্রণে বাংলাদেশে এসেছিলেন। সফরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন ড. ইউনূস।
এছাড়া মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গেও ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ হতে পারে।
তার সফর সঙ্গীর তালিকায় রয়েছে- পররাষ্ট্র, প্রবাসীকল্যাণ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ছাড়াও আছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত।
মালয়েশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে এই সফর। এই সফরে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি সহযোগিতা, ব্যবসায়িক কাউন্সিল গঠনসহ মোট ৫টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে পারে।
রোববার (১০ আগস্ট) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র শাহ আসিফ রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা।
সফর নিয়ে শফিকুল আলম বলেন, এই সফরের মাধ্যমে মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও গভীর হবে। প্রবাসী শ্রমিক নিয়োগে মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
অভিবাসন, বিনিয়োগ এবং গভীর সমুদ্রে মাছ ধরায় সহযোগিতা-এসব বিষয় সফরের আলোচনায় অগ্রাধিকার পাবে।
প্রধান উপদেষ্টার মুখপাত্র শাহ আসিফ রহমান জানান, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে আগামী ১১ থেকে ১৩ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা দেশটিতে দ্বিপক্ষীয় সরকারি সফরে যাবেন।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যানসহ অন্য কর্মকর্তারা সফর করবেন।
মালয়েশিয়া পৌঁছে প্রধান উপদেষ্টা গার্ড অব অনারে অভ্যর্থনা পাবেন। মঙ্গলবার পুত্রজায়ায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুই দেশের সরকারপ্রধানদের একান্ত বৈঠক হবে। এর পরপরই প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং নির্ধারিত সমঝোতা স্মারক সই হবে।
সম্ভাব্য ৫টি সমঝোতা স্মারক হলো-
প্রতিরক্ষা ও জ্বালানিবিষয়ক সহযোগিতা, ব্যবসায়িক কাউন্সিল গঠন, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিএমসিসিআই) ও মালয়েশিয়ার চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মিমোসের মধ্যে সহযোগিতা, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ ও মালয়েশিয়ার ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মধ্যে সহযোগিতা।
এছাড়া হালাল ইকো সিস্টেম, উচ্চশিক্ষা এবং কূটনীতিক প্রশিক্ষণ একাডেমির মধ্যে সহযোগিতাবিষয়ক ৩টি এক্সচেঞ্জ অব নোট সই হবে।
সমঝোতা সইয়ের পর সংবাদ সম্মেলন এবং প্রধান উপদেষ্টার সম্মানে রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন রয়েছে। একই দিনে তিনি একটি ব্যবসায়িক ফোরামে যোগ দেবেন এবং মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।