জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের রংপুরের বাসভবন স্কাইভিউতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩০ মে) রাত ১১টার দিকে জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আরিফ আলী বাদী হয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এতে মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আরিফ আলী বলেন, রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমিসহ জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতা মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় জিএম কাদেরের বাস ভবনে তাণ্ডবের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান এক ঘণ্টারও বেশি সময় বসিয়ে রেখে টালবাহানা শুরু করেন।
একপর্যায়ে ওসি মামলা রেকর্ড করতে পারবেন না বলে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে যেভাবে পুলিশ আওয়ামী লীগের কথা ছাড়া মামলা গ্রহণ করতো না। এখন ৫ আগস্টের পর আবারও একই কাজ করছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে জিএম কাদেরের রংপুরের বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একটি মোটরসাইকেল ও তিনটি গাড়িতে আগুন দেওয়াসহ বাড়িটিতে ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় পার্টি।
জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা এ হামলা চালিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও জাপা নেতাদের ভাষ্যমতে, বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা থেকে রংপুর নগরীর নিউ সেনপাড়ার বাসভবন স্কাইভিউতে আসেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
তাকে গ্রেফতারের দাবিতে রাত পৌনে ৯টার দিকে নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড় থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা দেশিয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল হাতে নিয়ে জি এম কাদেরের বাড়িতে হামলা চালায়।
এ সময় বাড়ির বাগানে থাকা তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও একটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে তারা চলে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা স্কাইভিউতে ছুটে যান। তারা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের একটি বিয়ের দাওয়াতে রংপুরে এসেছিলেন। খবর পেয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির নেতা-কর্মীরা তাকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ করে বাড়িতে হামলা চালিয়েছে।
আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা কর্মসূচি দেব।
জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ইয়াসির আহমেদ বলেন, আমরা রাতে সেন্ট্রাল রোডের দলীয় কার্যালয়ে ছিলাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপিসহ অন্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা প্রেসক্লাবে অবস্থান নিয়েছিলেন।
তারা হঠাৎ মিছিল নিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা রংপুরে সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি করে আসছিলাম। তারা যে আগুন জ্বালিয়েছে তা নেভাতে পারবে না।
তবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সংগঠক আলমগীর কবির বলেন, এ হামলার সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই। রংপুরে কোন কমিটি নেই। কেউ সেখানে গিয়ে থাকলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে গিয়েছেন।